আর্থার রস, বছর ৭১ বছর। এই বয়সে এসে ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া (ইউবিসি) থেকে তার ব্যাচেলর অফ আর্টস ডিগ্রি সম্পন্ন করে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করেছেন আর্থার। শুধু তাই নয় কলেজে ভর্তির ৫৪ বছর পর স্নাতক হয়েছেন বিশ্বের ধীরস্থির এই পড়ুয়া। ১৯৬৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে কিছুতেই তাঁকে স্নাতক স্তর থেকে টলানো যাচ্ছিল না। গত বৃহস্পতিবার স্নাতকের ফল বের হয়। প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পরে এবার স-সম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
স্নাতক হবার পর রস বলেন, ”আমি শুধু শিখতে চেয়েছিলাম কারণ আমি কৌতূহলী ছিলাম।” শেখার সেই আকাঙ্ক্ষাই তাকে এত বছর পর ডিগ্রি শেষ করতে অনুপ্রাণিত করেছে। ইংরেজিতে ডিগ্রী অর্জনের ইচ্ছার পাশাপাশি , আর্থার রস থিয়েটারের প্রতি তার আবেগ খুঁজে পান। পারফর্মিং আর্টের প্রতি তাঁর ঝোঁক এতটাই বেড়ে যায় যে তিনি থিয়েটার বিভাগে তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতে থাকেন। এই সময় তিনি ইংরেজি পড়া বন্ধ করে অভিনেতা হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেন।
নিকোলা ক্যাভেন্ডিশ, ল্যারি লিলো, ব্রেন্ট কার্ভার এবং রুথ নিকলের মতো বিখ্যাত কানাডিয়ান অভিনেতাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনার জন্য আর্থার ভর্তি হন কানাডার মন্ট্রিলের ন্যাশনাল থিয়েটার স্কুলে। কিন্তু সেখানেও বেশি দিন তিনি মন বসাতে পারেন নি। রস যখন একজন অভিনেতার জীবনের সংগ্রামের দিকগুলি গভীরভাবে আবিষ্কার করেন তখন তিনি নাটক নিয়ে পড়াশোনার পাঠে ইতি টানেন। এরপর ফের ফিরে আসেন ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলম্বিয়ায়।
রস ইউবিসি-তে তার তিন বছরের একাডেমিক কাজ নিয়েছিলেন এবং সেখান থেকেই টরন্টোর আইন স্কুলে যান, স্নাতক হন। ২০১৬ সালে অবসর নেওয়ার আগে মেট্রো ভ্যাঙ্কুভারে সিভিল লিটিগেটর হিসাবে ৩৫বছর অতিবাহিত করেন। চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়ে ২০১৭ সালে ইতিহাস নিয়ে কানাডার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ‘বিশ্বযুদ্ধ’ -এর অংশটি ছিল তাঁর কাছে গভীর আগ্রহের বিষয়। বিশ্বযুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারিনি কেন এত লোক এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো ?” বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭১ বছর বয়সেও তাঁকে ছাত্র হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আর্থার। ৫৪ বছরের দীর্ঘ যাত্রার পর কানাডার ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করলেন আর্থার রস।