‘এখনই রাজনৈতিক দল গঠনের অভিপ্রায় আমাদের নেই। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যাঁরা আছেন, কারোই ক্ষমতার অভিলাষ নেই। সবার পেশাগত জীবন আছে। সবাই সেখানে ফিরে যেতে চান।’ রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজিব এ কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ সজিব বলেন, ‘জনগণ তো নির্বাচনের জন্য বা ক্ষমতার পালা বদলের জন্য গণঅভ্যুত্থানে আসেনি। যদি আসতো সেটা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেই আসতো। এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে স্পষ্টভাবে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের জন্য। বিদ্যমান ব্যবস্থার যদি সংস্কার করে দিতে না পারি, যে রাজনৈতিক সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এই স্বৈরাচারী ব্যবস্থার মধ্যে নিজেও স্বৈরাচার হতে বাধ্য হবে। সে কারণেই এই সংস্কারটা অত্যাবশকীয়। দেশের জনগণ যেভাবে দেশকে গড়তে চাবে, দেশ পুনর্গঠনের প্রস্তাব মানুষের মধ্য থেকে আসবে, সেটার বাস্তবায়ন করাই আমাদের দায়িত্ব হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উল্লেখ করে শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, সেটা এক দফারই অংশ, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। সেই আট দফার যে মূল অংশ ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ, সে বিলোপের জন্য যে সংস্কারগুলো অত্যাবশকীয় সেগুলো করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এটা জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতেই হয়েছে।’
নতুন রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, এখনই রাজনৈতিক দল গঠনের অভিপ্রায় আমাদের নেই। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যাঁরা আছেন, কারোই ক্ষমতার অভিলাষ নেই। সবার পেশাগত জীবন আছে, সবাই সেখানে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটি যথাযথভাবে পালন করে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও উপদেষ্টা আদিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিতভাবে তারা বসছেন। এর বাইরেও আনঅফিশিয়ালি যোগাযোগ রাখছেন, যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। দেশ পুনর্গঠনের এই যাত্রায় রাজনৈতিক দলগুলোসহ সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক আব্দুর রহিম খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. হাবিব উল্লাহ, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পুটিআইনেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান মাহফুজুর রহমান ভুঁইয়া বক্তব্য দেন।