সুমন হত্যা
তৌফিক-ই-ইলাহী ৪ দিনের রিমান্ডে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বাড্ডায় সুমন শিকদার হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক আলী হায়দার তৌফিক-ই-ইলাহীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানান, গত ১৫ বছরে দেশের বিদুৎ ও জ্বালানি খাতের ধ্বংসকারী এবং হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচারে সহায়তা করেছেন তৌফিক-ই-ইলাহী। ভারতের আদানি গ্রুপ থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনে তারা লাভবান হয়েছেন। যাদের এই খাতে কোনো অভিজ্ঞতা নেই তাদেরকেও কুইক রেন্টাল দিয়ে দেশের হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। গোপনে বিদ্যুৎ বিলের নামে মানুষের থেকে অর্থ চুরি করেছে।
তিনি আরও জানান, ১৯ জুলাই সুমন শিকদার হত্যা মামলা বাড্ডা থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে সাসপেক্টেড আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে, আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত। আর কে কে জড়িত রয়েছে, সেই তথ্যের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালত তৌফিক-ই-ইলাহীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, ‘বাড্ডা থানায় মামলার এজাহারে তৌফিক-ই-ইলাহীর কোনো নাম নেই। তিনি সাসপেক্টেড আসামি। ২৫০ জনের মধ্যে তার কোনো নাম নেই। তিনি একজন উচ্চশিক্ষিত এবং মুক্তিযোদ্ধা। দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাও ছিলেন। বাংলাদেশের বিদ্যুতের অগ্রগতি তার হাত ধরেই হয়েছে। দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করে রফতানিমুখী করেছেন তৌফিক-ই-ইলাহী।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিমান্ডে নেয়ার মতো গ্রাউন্ডস তার বিরুদ্ধে নেই। তার বয়স ৮২ বছর। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে এবং রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আমরা জামিন আবেদন করলেও বাতিল হয়েছে। বয়স্ক বিবেচনায় তার চার দিন রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।’
এর আগে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশান থেকে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাড্ডা ফুজি টাওয়ারের উত্তর পাশে প্রগতি সরণিতে রাস্তার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন সুমন সিকদার। এ ঘটনায় তার মা মাসুমা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় তৌফিক-ই-ইলাহীকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে অবসরে যান তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।