মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বয়স এখন ৩৭ বছর ৮৩ দিন। টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন। সাস্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সবশেষ পারফরম্যান্স আহামরি নয়। গেল ১২ মাসে খেলেছেন ১২টি ওয়ানডে। সেখানে ১১ ইনিংসে করেন ৪৮.৫০ গড়ে ৩৮৮ রান। হাঁকিয়েছেন ২ ফিফটি সেখানে আছে ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংসটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তবে বয়স, পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে চলতি বছর অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার সুযোগ হবে কিনা তা নিয়ে আছে যথেষ্ট সন্দেহ। তাইতো কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন তার বিশ্বকাপ ভাগ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন! যদিও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছেন তাদের বিশ্বকাপ ভাবনাতে আছেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। একই সুরে কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও।
শুধু তাই নয় বিশ্বকাপের জন্য তাদের তৈরি ২৪ জন ক্রিকেটারের পুলেও আছেন মাহমুদুল্লাহ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুধু মাহমুদুল্লাহ না, ২৪ জন খেলোয়াড় নিয়ে আমরা বিশ^কাপের পুল করেছি। সুতরাং এখানে নির্দিষ্ট কোনো নাম না, এখানে যারা আছে সবাইকে বিশ্বকাপের জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে।’ শুধু তাই নয় এই তালিকাতে আছেন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নাঈম শেখ।
হাথুরুসিংহে জাতীয় দলের প্রধান কোচের পদে ফেরার পর থেকেই গুঞ্জন ছিল মাহমুদুল্লাহর বাদ পড়ার বিষয়টি। যদিও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটারদের তালিকায় তিনে রয়েছেন তিনি। এই সময়ে ৩৬ ম্যাচে ৯৭৪ রান করেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। প্রায় চল্লিশ গড়ে রান তোলা মাহমুদুল্লাহর স্ট্রাইক রেট ৭৪.০১। রানে থাকলেও স্ট্রাইক রেট প্রত্যাশা মেটাতে পারছে না এই ফিনিশার। মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং এর সঙ্গে ফিল্ডিংয়ে যে বয়সের ছাপ পড়েছে সেটার প্রমাণ মিলছে ম্যাচগুলোতে। এক সময় বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডারের ভরসা ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতেন আবার কখনো ম্যাচ বের করে দলকে আনন্দে ভাসাতেন। কিন্ত তার সেøা ব্যাটিং দলকে ফিনিশিংয়ে বিপদেই ফেলছে। নির্বাচকদের ২৪ জনের পুলে থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের মূল স্কোয়াডে তাকে জায়গা পেতে হলে জয় করতে হবে বয়সের ভার ও দেখাতে হবে লোয়ার অর্ডারে তার সক্ষমতা। বিশ্বকাপ দল নিয়ে নিজেদের ভাবনা জানাতে গিয়ে নান্নু বলেন, ‘ব্যাক টু ব্যাক অনেকগুলো সিরিজ আছে। বিশ্বকাপের আগে তো আমাদের এশিয়া কাপ আছে, আফগানিস্তান সিরিজ আছে, এখন আয়ারল্যান্ড সিরিজ আছে। প্রত্যেকটা সিরিজ নিয়েই আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। এত বেশি খেলা, খেলোয়াড়দের ফিটনেসও একটা চিন্তার বিষয়। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি। আশা করছি সিরিজ বাই সিরিজ রেডি করে এশিয়া কাপের মাঝে বিশ্বকাপের জন্য দল প্রস্তুত করে ফেলতে পারবো।’
ভাবনায় আছে আফিফ-নাঈমও
অন্যদিকে ওয়ানডেতে মাহমদুল্লাহর পর ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা হচ্ছিল প্রতিভাবান ব্যাটার আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। কিন্তু তিনি জাতীয় দলে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। সবশেষ আয়ারল্যান্ডেরে বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাকে দলেই রাখা হয়নি। তবে তাকেও আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচকরা ২৪ জনের পুলে বিবেচনায় রেখেছেন। একইভাবে আরেক তরুণ ওপেনার নাঈম শেখকেও রাখা হয়েছে এই তালিকাতে। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন বলেন, ‘(আফিফ) অবশ্যই, পুলে থাকা যে ২৪ ক্রিকেটারকে আমরা রেডি করে রেখেছি এদের সবাইকে মনিটরিং করা হচ্ছে এবং কেউ চোখের আড়াল হচ্ছে না। যাকে যখন প্রয়োজন মনে করবো তখনই তাকে দলে নেয়া হবে। নাইম শেখ অবশ্যই ভালো করছে। ওতো আমাদের এইচপিতে ছিল এবং ‘এ’ দলের সামনে সিরিজ আছে ওইখানেও দেখবো। আমি যেটা বললাম ডিপিএলে অনেকগুলো খেলোয়াড় ভালো পারফর্ম করছে। এদেরকে ভালো করে মনিটরিং করা হচ্ছে এবং আমাদের পুলের মাঝে যে ২৪ জন খেলোয়াড় আছে সেখানে অবশ্যই ও থাকবে।’ ডিপিএলের এবারের আসরে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে আছেন নাইম। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলা এই ওপেনার ১১ ম্যাচে করেছেন ৭১৯ রান। তার চেয়ে বেশি রান নেই আর কারও। ৮৯.৮৭ গড়ে রান তোলা নাইমের সাত হাফ সেষ্ণুরির সঙ্গে রয়েছে একটি সেষ্ণুরিও।