ফটিকছড়ির ভূজপুরে সাবেক স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার সময় বাধা দেওয়ায় নাবালিকা শ্যালিকাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় ভগ্নিপতি নাসিরকে ১২ বছর পলাতক থাকার পর গ্রেফতার করেছে র্যাব।
রোববার (২৮ মে) লোহাগাড়ার চুনতি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সে পূর্ব ভূজপুর এলাকার নূরু আহমদের পুত্র।
র্যাব জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দেলোয়ারা বেগমের সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শাহ পরানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
এই বিয়ের ঘটক ছিলেন শাহ পরানের ভগ্নিপতি নাসির ওরফে নাসিম। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে শাহ পরান। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান দেলোয়ারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ারাকে হত্যার হুমকি দেয় সাবেক স্বামী। শাহ পরানকে তালাক দেওয়ায় নাসিরও দেলোয়ারার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
এরপর ১ এপ্রিল ভোর চারটার দিকে শাহ পরান তার ভগ্নিপতি নাসিরসহ শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রী দেলোয়ারাকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় তার চিৎকারে ছেটবোন ফারহানা ইয়াছমিন ওরফে রিকা মনি ও তার মা জেগে উঠে শাহ পরানকে বাধা দিলে রিকা মনিকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রিকা মনি৷ এসময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হাতে থাকা ছুরি ও একটি ব্লেড রেখে পালিয়ে যায় শাহ পরান ও তার ভগ্নিপতি। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা দেলোয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এই ঘটনায় দেলোয়ারার মা বাদী হয়ে শাহ পরান ও নাসিরকে আসামি করে ভূজপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে শাহ পরানকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও জামিনে বের হয়ে পলাতক ছিলেন। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল এই মামলায় শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ড ও নাসিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন নাসির। গত ২৬ মে রাউজানের নোয়াপাড়া থেকে শাহ পরানকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার বলেন, গত ২৬ মে শাহ পরানকে গ্রেফতারের দুইদিন পর নাসিরের অবস্থানও শনাক্ত করা হয়। এরপর ২৮ মে লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার পরপরই পালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলে যায় নাসির। সে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় নানা অনুষ্ঠান ও খাবার হোটেলে বাবুর্চির কাজ করতো। গ্রেফতারের ভয়ে এক জায়গায় বেশিদিন অবস্থান করতো না।